ব্রিডিং এ দেয়ার পূর্বে পাখি পালকদের করণীয়

 

ব্রিডিং এ দেয়ার পূর্বে পাখি পালকদের করণীয়

অনেকেই তার শখের পাখির ব্রিডিং এ দেয়ার পর বিভিন্ন ধরনের কমন কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।।


১/যেমন ডিম ফার্টাইল হচ্ছে না,
২/ডিম ফেলে দিচ্ছে,
৩/বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে না,
৪/বাচ্চার পালক খেয়ে ফেলছে,
৫/বাচ্চার শরীরে পালক গজাচ্ছে না,
৬/একটু বড় হওয়ার পর মা-বাবা বাচ্চাকে ঠুকরিয়ে মেরে ফেলছে।


এই সব সমস্যার গুলি সাধারণত যে কারণ এর জন্য হয়ে থাকে।।

সুষম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য সঠিক নিয়মে পাখিকে সরবরাহ না করা।।
ইচ্ছেমত যে কোন উপায়ে পাখির নিকট থেকে ডিম ও বাচ্চা আশা করা।।

যারা সমস্যা আক্রান্ত হচ্ছেন ব্রিডিং করাতে গিয়ে। তাদের জন্য কিছু অতি জরুরী অবশ্য পালনীয় কিছু টিপস দিচ্ছি।

আশাকরি আপনারা এ পরামর্শগুলোকে গুরুত্বহীন মনে করে এড়িয়ে যাবেন না।

01. ব্রিডিং পেয়ার নির্বাচন:

আপনি হয়তো মিডিয়ার কল্যানে ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছেন যে, বারো বছরের একজন মেয়েও গর্ভধারণ এবং বাচ্চা জন্মদানে সক্ষম। কিন্তু এটা কি স্বাভাবিক? আপনি কি আপনার মেয়ে  কে এই বয়সে সন্তান জন্মদানের জন্য বিয়ে দিবেন? সুস্থ্য বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ হলে এ কাজ আপনার দ্বারা কখনোই সংঘঠিত হবে না। সুতরাং মেটিং করতে চইছে এবং মুডে এসেছে এমনটা পরিলক্ষিত হলেই কম বয়সী  মেল-ফিমেল পাখিকে পেয়ার বানিয়ে ডিম-বাচ্চার আশায় খাঁচায় ঢুকিয়ে দেয়াটাও কোন সুস্থ্য সচেতন পাখি পালকের কাজ হতে পারে না।

আমার  পাখি পালন অভিজ্ঞতা থেকে এক্ষেত্রে পরামর্শ হচ্ছে, মেল ও ফিমেল পর্যাপ্ত বয়স না হলে ব্রিডিং এ দেওয়া যাবে না। ।

02. খাঁচা নির্বাচন :

অনেকে মনে করেন, এইতো ছোটো শরীরের দুটো পাখি, এরজন্য কি পুরো ঘর ছেড়ে দিতে হবে?! আসলে এই মানসিকতার লোকজন পাখি পালক নয়,

আপনার সামর্থ থাকলে এক জোড়ার জন্য অবশ্যই 18/18/18 সাইজের খাঁচা দেবেন। অপারগতায় 18/12/14 সাইজও ব্যবহার করা যায়। তবে এর নীচে চিন্তা করলে  জন্য পাখির ক্ষতিকর হতে পারে।

পাখি বিশেষে খাঁচার মাপ আলাদা হতে পারে ।

03. হাড়ি নির্বাচন :

সঠিক মাপের হাড়ি দিতে হবে, যার প্রশস্ততা হতে হবে ন্যূনতম 6ইঞ্চি।অনেক ক্ষেত্রেই হাড়ি পছন্দ ও নিরাপদ মনে না হওয়ার পাখি বাহিরে ডিম পাড়ে সুতরাং বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।।
পাখি বিশেষে হাড়ির মাপ বিভিন্ন হতে পারে ।।

04. খাঁচা রাখার জায়গা নির্বাচন:

আপনার বাসগৃহের এমন সুন্দর ও উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন যেখানে আপনার শখের পাখিগুলো স্বাভাবিক আলো বাতাস পাবে এবং অপেক্ষাকৃত কম ডিসটার্ব ফিল করবে।

05. ব্রিডিং পেয়ার নির্বাচন :

পাখি মেল ফিমেল উভয়ই ব্রিডিং মুডে না আসলে পেয়ার দিবেন না বা একই খাঁচায় রাখবেন না। এতে অনেক সময়ই মুডে আসা পাখিটির হিংস্র আক্রমনের শিকার হয় সঙ্গী পাখিটি। তাই উভয়ই মুডে আসার পর পেয়ার দেবেন।

06. হাড়ি কখন দেবেন?

মুডে থাকা পেয়ার পর্যাপ্ত সময় নিয়ে মেটিং করার পর খাঁচার ভিতর হাড়ি দেবেন। না হলে ফিমেল পাখিটা হাড়িতে গিয়ে বসে থাকে আর মেলটা মেটিং এর জন্য হাড়িতে ঢুকে আক্রমন করে ফিমেলকে। অনেক সময় হাড়ি পেয়ে ফিমেলটা ডিম পেড়ে দেয় আর পর্যাপ্ত মেটিং বঞ্চিত মেলটা হাড়িতে ঢুকে ডিমগুলো ফেলে দেয়।

07. ব্রিডিং পিড়িয়ডে কোন মেডিসিন কোর্স করানোর প্রয়োজন আছে কি??

আসলে আমি যত পরামর্শই দেই না কেন, অধিকাংশ পাখি পালক তার পাখির খাদ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতন নন। তাই ব্রিডিং এ দেয়া পাখি পুস্টিহীনতায় আক্রান্ত হয় স্বাভাবিকভাবেই। এজন্য যারা সুষম খাদ্য চার্ট ফলো করেন না তারা নীচের মেডিসিন কোর্স অনুসরন করতে পারেন

ব্রিডিং এর পূর্বে মেটিং চলাকালীন ১বার cadisol dc  লকিুইড ১ ml ১00ml  জল এ vimeral লকিুইড ১ মিলি ১০০ ml জল  ৩ দিন করে  খাওয়াবেন।

ক্লাচের ১ম বাচ্চাটির জন্মের পর
৩ দিন টক দই ১চা চামচ বা 5মিলি Apple Cider Vinegar  প্রবায়টিক হিসেবে ৫০০মিলি জলে
৩ দিন বি-কমপ্লেক্স সিরাপ ১ মিলি ১০০মিলি জলে
৩ দিন -Neopeptin ১মিলি ১০০মিলি জলে

08. ব্রিডিং এর সময় খাদ্য তালিকায় অপরিহার্য কিছু উপাদান  করতে পারেন:

ফিমেল পাখি যখন ডিম দেয় তখন তার শরীরে প্রচুর ক্যালসিয়ামের অভাব দেয়া দেয়। Vitamin D ক্যালসিয়ামের এই অভাব পূরনে সহায়তা করে। তাই পাখির ব্রিডিং এর আগে ও পরে Vitamin D যুক্ত খাবার দেয়া জরুরী। Cod Liver Oil, ডিমের কুসুম, সূ্র্যমুখীর বীজে Vitamin D থাকে। এগুলোর মধ্যে Cod Liver Oil এ সবচেয়ে বেশী পরিমাণে Vitamin D থাকে। যা এগফুড এর সাথে মিশিয়ে খেতে দিতে পারেন।

Vitamin E দেহের স্বাভাবিক বিকাশ নিয়ন্ত্রন করে বাচ্চা পাখির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। Vitamin E পাখির প্রজনন অংগের ক্ষমতা বৃদ্ধি, পাখির পেটে ডিম হওয়া ও এই অবস্থায় ডিমের ভেতরের ভ্রুনের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং ডিম দেয়ার কার্য নিয়ন্ত্রণ করে। পরিমিত Vitamin E পাখির এগ বাইন্ডিং এর ঝুকি কমায়। কলমি শাক, বরবটি জাতিয় সবুজ শাক-সবজি, সূর্যমূখীর বীজ, তিল, ডিমের কুসুম, ভিটামিন ' ই ' পাওয়া যায়।

পরামর্শ গ্রহন না করে যারা ইচ্ছে মতো ব্রিড করানোর মানসিকতা নিয়ে পাখি পালন করছেন তাদেরকে নমস্কার  অহেতুক প্রশ্ন করে বিরক্ত করবেন না। আপনি পাখি না পালন করলে ধ্বংস হয়ে যাবেন না কিন্তু পাখি কিনে তাকে যথাযথ যত্ন না নেয়ার কারণে পাখিটিকে মেরে ফেলা আপনার পক্ষে  উচিত হবে না।।

যদি আপনার কাজে লাগে তাহলে পোস্টটি শেয়ার করুন ।
ধন্যবাদ

চ্যানেলের নাম BARASAT BIRDS BREEDER

Youtube chenel LINK:-

https://m.youtube.com/channel/UCHROIvgQ8tMym_JPmKWZtbw

Facebook page link.

https://m.facebook.com/Raj.basak.1995/?ref=bookmarks

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন লাইক করবেন. পোস্ট টি পড়ার জন্য অন্নেক ধন্যবাদ.

BARASAT BIRDS BREEDER


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন